হানি ট্র্যাপে ভারতীয় নৌ কর্মকর্তা, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার


 দুই ঠিকাদার কর্মীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ নৌঘাঁটির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। এতে পাচার হয়েছে ঘাঁটির সংবেদনশীল এলাকার ছবি, ভিডিও, নথিসহ বিভিন্ন ভবনের নকশা। এমন অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (আইএসআই) বিরুদ্ধে। ভারতীয় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনআইএ) দাবি, নারী গোয়েন্দাকে ব্যবহার করে সুকৌশলে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ পর্যন্ত দুই জনকে আটক করেছে দেশটির এনআইএ। খবর হিন্দুস্থান টাইমসের।

জানা যায়, ১১ হাজারেরও বেশি একর জায়গা নিয়ে ভারতের ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টে অবস্থিত নৌঘাঁটি- ‛আইএনএস কদম্ব’। বর্তমানে এটিই দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ নৌঘাঁটি। তবে, সম্প্রসারণ কাজ শেষ হলে পূর্ব গোলার্ধ্বের সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটিতে পরিণত হবে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে আইএনএস কদম্বকে। সামরিক ও প্রতিরক্ষাখাতে কৌশলগত ব্যাপক অবদান রয়েছে। তবে, চতুর্দিক নিরাপত্তায় মোড়া এই ঘাঁটির সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। এমন অভিযোগ উঠেছে দেশটির প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) বিরুদ্ধে।

এদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর দাবি- ঐ নৌঘাঁটিতে কর্মরত দুই সিভিলিয়ান ঠিকাদার কর্মীদের হানিট্র্যাপে ফেলে তথ্য হাতিয়ে নেয় নাফিসা জান্নাত নামের এক পাকিস্তানি নারী গোয়েন্দা। যার সাথে ২০২৩ সাল থেকে পরিচয় ছিল ঐ দুই কর্মীর। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক এবং টেলিগ্রামে ভিন্ন নামের তাদের সাথে শখ্যতা গড়ে তোলেন ঐ নারী।

গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ঐ দুই ঠিকাদার কর্মীর মাধ্যমে আইএনএস কদম্বের খুবই সংরক্ষিত স্থানের ছবি, ভিডিও, গুরুত্বপূর্ণ নথি, নির্মাণাধীন স্থাপনার নকশা, সিমুলেটর বিল্ডিং এরিয়ার ছবি সুকৌশলে হাতিয়ে নেন ঐ পাকিস্তানি গোয়েন্দা। এমনকি কোন জাহাজ কখন কোথায় টহল দেয়, কোনটি অপারেশনাল কিংবা রেডি টু এনগেজ মুডে থাকে এসব তথ্য রয়েছে আইএসআই’র কাছে।

তবে, আটক দুই ব্যক্তির ভাষ্যমতে, প্রতি মাসে তাদের ৫ হাজার রুপি করে দেয়া হত। টানা ৮মাস টাকা দিয়ে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাদের বিশ্বাস অর্জন করে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা। সম্প্রতি, তাদের মাধ্যমে পাচার হয় ভারতীয় নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

উল্লেখ্য, গত বছরও বিশাখাপাটনাম নৌঁঘাটিতে এক ভারতীয় নেভি অফিসারকে হানি ট্র্যাপে ফেলে তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা- আইএসআই’র বিরুদ্ধে।

গণমাধ্যমকে সঙ্গে নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা

 

আয়নাঘর পরিদর্শনে গেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম কর্মী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শনে যান তিনি।

এর আগে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়— দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমসহ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আয়নাঘর পরিদর্শনে যাবেন।

শেখ হাসিনার শাসনকালে ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬০৫ জনকে গোপনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

আরেক তথ্যে বলা হয়, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৪৪ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়। তাদের মধ্যে ৪০ জন ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ৬৬ জনকে সরকারি হেফাজতে গ্রেফতার অবস্থায় পাওয়া গেছে।

যারা দীর্ঘদিন গুম থাকার পর ফিরে আসেন, তারা গুমের ব্যাপারে মৌনতা অবলম্বন করেছেন। ধারণা করা হয়, এসব মানুষদের গুম করে রাখা হয় আয়নাঘরে।

অভিযোগ রয়েছে, আয়নাঘরেই বন্দি ছিলেন, অধ্যাপক মোবাশার হাসান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান, ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায়, মাইকেল চাকমা ও মীর আহমদ বিন কাসেমসহ অনেকে।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ‘বিশেষ’ স্থানে রাখা হতো। এ নিয়ে সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এসব স্থান ‘আয়নাঘর’ নামে প্রকাশ্যে আসে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের অনেকে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর আয়নাঘর থেকে ফিরে আসেন পরিবারের কাছে। তাদের বয়ানে উঠে এসেছে আয়নাঘরের ভয়াবহতা।

ডেভিল হান্ট: দ্বিতীয় দিন সারাদেশে আটক দুই শতাধিক

 

সারাদেশে অপারেশন ডেভিল হান্টের দ্বিতীয় দিনে দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আটক ও গ্রেফতার হয়েছে। গাজীপুরে অন্তত ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানায় ৬, শ্রীপুরে ৫, কালীগঞ্জ ৪, কাপাসিয়া ৩ এবং কালিয়াকৈরে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া, মহানগরের ১১ থানায় অভিযান চালিয়ে হেফাজতে নেয়া হয় ৭৯ জনকে। গ্রেফতার সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী। এই নিয়ে গত দুই দিনে এই জেলায় ১৮২ জনকে গ্রেফতার করলো পুলিশ।

এছাড়া, দেশের বিভিন্ন জেলায় অপারেশন ডেভিল হান্টে আরও অন্তত ১১১ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। এরমধ্যে রংপুরেই গ্রেফতার করা হয় ৩০ জনকে।

পুলিশ জানায়, রংপুর মহানগরী থেকে ৫ এবং বিভাগের ৮ জেলা থেকে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা সবাই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। নেত্রকোণাতেও গ্রেফতার করা হয়েছে ২৯ জনকে। নারায়ণগঞ্জেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ ১৯ জনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

এছাড়া, ভোলায় কোস্ট গার্ডের অভিযানে ১৪ জন, খাগড়াছড়িতে ১০, রাজশাহী মহানগরীতে ৪, চুয়াডাঙ্গায় ৩ জন এবং হবিগঞ্জে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

নাচতে নাচতে বিয়ের হলদি অনুষ্ঠানে হার্ট অ্যাটাকে তরুণীর মৃত্যু


 বিয়ের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুই শতাধিক মানুষ। সবাই তরুণীর নাচ দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এরপর মঞ্চে প্রবেশ করেন তরুণী। উদ্দেশ্য সবার জন্য নৃত্য পরিবেশন করবেন। তবে নৃত্য পরিবেশন করতে গিয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে। ওই রাজ্যের বিদিশা জেলার একটি রিসোর্টে বিয়ের অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করতে গিয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ২৩ বছর বয়সী এক তরুণী মারা গেছেন।

মৃত ওই তরুণীকে পরিনিতার জৈন হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তিনি ইন্দোরের বাসিন্দা। চাচাতো বোনের বিয়ের আয়োজনে হলদি অনুষ্ঠানে এসে এমন করুন পরিণতি হয় পরিনিতার।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মৃত্যুর আগে পরিনিতা ‘হালদি’ অনুষ্ঠানের সময় মঞ্চে নাচছিলেন। বলিউডের জনপ্রিয় ‘লেহরা কে বলখা কে’ গানের তালে নাচার সময় স্থানীয় সময় শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে মঞ্চে হঠাৎ ঢলে পড়েন পরিনিতা।

প্রবাসী আয়ের শীর্ষ পাঁচে ইসলামী, সোনালী, ব্র্যাক, ট্রাস্ট ও অগ্রণী ব্যাংক


 দেশে সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে যত প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে তার প্রায় অর্ধেক বা ৪৫ শতাংশই এসেছে পাঁচটি ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংক পাঁচটি হচ্ছে—ইসলামী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংক। এই পাঁচ ব্যাংকের মাধ্যমে গত জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ৯২ কোটি মার্কিন ডলার, যা ওই মাসে আসা মোট প্রবাসী আয়ের ৪২ শতাংশ। জানুয়ারিতে দেশে মোট প্রবাসী আয় এসেছে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ ডলার। প্রবাসী আয়–সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে উল্লিখিত পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে তিন ব্যাংকের অবস্থানের অদলবদল ঘটেছে। গত ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় আনার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক। ওই মাসে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৬ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। জানুয়ারিতে এসে অগ্রণী ব্যাংক পঞ্চম অবস্থানে নেমে গেছে। জানুয়ারিতে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে সাড়ে ১৩ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে।

অগ্রণী ব্যাংক দ্বিতীয় অবস্থান থেকে পঞ্চম অবস্থানে নেমে যাওয়ায় জানুয়ারিতে প্রবাসী আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক। এই ব্যাংকটির মাধ্যমে গত মাসে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ১৮ কোটি ডলার। ডিসেম্বরে এসেছিল ২১ কোটি ডলার। ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসা কমলেও শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে এটি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

প্রবাসী আয় আনার ক্ষেত্রে জানুয়ারিতে এক ধাপ উন্নতি হয়েছে বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংকের। গত মাসে এই ব্যাংকটি প্রবাসী আয় এনেছে ১৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার। ডিসেম্বরে ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯ কোটি ৩২ লাখ ডলার। সেই হিসাবে ডিসেম্বরের চেয়ে জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় আসা কমলেও শীর্ষ তালিকায় এটি তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের মতো বেসরকারি খাতের ট্রাস্ট ব্যাংকেরও এক ধাপ উন্নতি হয়েছে। প্রবাসী আয় আনার দিক থেকে গত জানুয়ারিতে ব্যাংকটি উঠে এসেছে শীর্ষ ৫ ব্যাংকের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে। গত মাসে ব্যাংকটির মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার। ডিসেম্বরে এসেছিল ১৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। ডিসেম্বরের চেয়ে জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় আসা কিছুটা কমলেও শীর্ষ তালিকায় এক ধাপ ওপরে উঠেছে ব্যাংকটি।

এদিকে প্রবাসী আয় আনার দিক থেকে শীর্ষস্থানের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে ইসলামী ব্যাংক। গত মাসে ব্যাংকটির মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২৮ কোটি ২২ লাখ ডলার। ডিসেম্বরে এসেছিল প্রায় ৩৭ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসা প্রায় ৯ কোটি ডলার কমেছে। তারপরও ব্যাংকটির শীর্ষ অবস্থানের কোনো হেরফের হয়নি। ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ বাংলাদেশের শ্রমিকপ্রধান দেশগুলোতে ইসলামী ব্যাংকের উপস্থিতি অন্য যেকোনো ব্যাংকের চেয়ে বেশি। এ কারণে দেশে অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সাড়া পায় শরিয়াহভিত্তিক এই ব্যাংকটি।

প্রবাসী আয় আনার তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা প্রত্যেক ব্যাংকেরই প্রবাসী আয় ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে কমেছে। কারণ, সার্বিকভাবে জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় ডিসেম্বরের চেয়ে কম এসেছে। গত জানুয়ারিতে সব মিলিয়ে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ ডলার। ডিসেম্বরে যার পরিমাণ ছিল ২৬৪ কোটি ডলার। সেই হিসাবে ডিসেম্বরের চেয়ে জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় সাড়ে ৪৫ কোটি ডলার বা সোয়া ১৭ শতাংশ কম এসেছে। তবে ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রবাসী আয় কয়েক মাস ধরেই ২০০ কোটি ডলারের ওপরে রয়েছে। এটি খুবই ইতিবাচক দিক।

লিবিয়ায় ২৩ লাশ উদ্ধার: ১৬ লাখে ‘বডি কন্ট্রাক্ট’ ঢাকা টু ইতালি


 মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কুদ্দুস ব্যাপারী (৩৩ছিলেন মালয়েশিয়ায়। ছয় মাস আগে ছুটিতে দেশে আসেন। এরপর স্থানীয় দালাল মনিরের প্রলোভনে পড়ে ইতালি যেতে রাজি হন তিনি। অবৈধ পথে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছাতে ১৬ লাখ টাকায় হয় ‘বডি কন্ট্রাক্ট

অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢোকার অন্যতম একটি পথ লিবিয়া।  পথে ইউরোপে যাওয়ার জন্য মূলত ব্যবহার করা হয় ছোট ছোট নৌকা। এসব নৌকায় ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়। প্রতিবছর  পথে যাত্রা করতে গিয়ে প্রাণ হারান অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশী।  জন্য  কাজে দালালেরা চালু করেছেন ‘বডি কন্ট্রাক্ট’ চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় যত দিন লাগুকঅভিবাসনপ্রত্যাশীকে ইতালি জীবিত পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে টাকা নেন দালাল। সে পর্যন্ত একজন অভিবাসনপ্রত্যাশীর থাকাখাওয়াবিমানভাড়াসবকিছুই বহন করে দালাল চক্র।

কুদ্দুস ব্যাপারী দালাল মনিরের টাকা পরিশোধ করতে তাঁর দুই বিঘা জমি ৪০ লাখ টাকা মূল্যে মনিরের স্ত্রী হামিদা বেগমের নামে লিখে দেন। চুক্তি অনুযায়ী মনির তাঁকে অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে পাঠালেও সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির পর থেকে কুদ্দুসের কোনো খোঁজ মিলছে না। পরিবারের ধারণাআরও অনেকের সঙ্গে কুদ্দুসও মারা গেছেন।

কুদ্দুস ইতালি যাচ্ছেন শুনে তাঁর ভগ্নিপতি সুজন হাওলাদার (৩৯বডি কন্ট্রাক্টে দালাল মনিরকে ১৬ লাখ টাকা দেন। তিনি এই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।

কুদ্দুস রাজৈর পৌরসভার মজুমদারকান্দি এলাকার আতাহার ব্যাপারীর ছেলে। সুজন হাওলাদার তাঁর চাচাতো বোনের স্বামী। সুজন খুলনা নৌবন্দর এলাকার হালিম হাওলাদার ছেলে। তাঁর গ্রামের বাড়ি খুলনা হলেও তাঁর পরিবারের জীবিত কেউ না থাকায় শ্বশুরবাড়ি রাজৈরের মজুমদারকান্দিতে দুই সন্তান  স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন।

পুলিশপরিবার  স্থানীয় সূত্রে জানা গেছেমালয়েশিয়ায়  বছর ছিলেন কুদ্দুস। বছরে একবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেশে আসতেন। আগস্টে নবজাতক সন্তানকে দেখতে দেশে এসেছিলেন। মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারের পরিস্থিতি ভালো চলছে না। এতে হতাশায় ছিলেন কুদ্দুস। বিষয়টি জানার পর থেকে মনির শেখ কুদ্দুসকে ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখান। মনিরের প্রস্তাবে রাজি হলে নভেম্বরের শুরুর দিকে ঢাকা থেকে প্রথমে মিসরে পাঠানো হয় কুদ্দুসকে। ভগ্নিপতি সুজন ২০ ডিসেম্বর ঘর ছাড়েন। তাঁকেও ঢাকা থেকে মিসর হয়ে নেওয়া হয় লিবিয়া। সেখানে একটি বন্দিশালায় প্রায় দুই মাস কাটানোর পর তাঁদের গত ২৪ জানুয়ারি ইতালির উদ্দেশে লিবিয়ার বেনগাজি উপকূল নেওয়া হয়। পরে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তাঁদের তুলে দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা বাদেই নৌকাটি ভূমধ্যসাগরে ডুবে যায়।  ঘটনায় এখন পর্যন্ত লিবিয়ার উপকূলে ২৩ জনের মরদেহ ভেসে এসেছে। এর মধ্যে সুজনের মৃত্যুর বিষয়টি তাঁর স্ত্রী মুন্নী বেগম নিশ্চিত করেছেন।

মুন্নী বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুজনের কোনো ঘরবাড়ি নেই। তাই বাবার বাড়িতে আমার দুইডা যমজ বাচ্চা নিয়া থাকি। ১৬ লাখ টাকা ধারদেনা কইরা মনির দালালরে দিছি। দালাল আমাগো লগে এইডা কী করলবডি কন্ট্রাক্টে কথা ছিলযেভাবেই হোক সুজনরে ঢাকা থিকা ইতালি পৌঁছে দিবে। সেই কথা রাখে নাই দালালে। মাঝসাগরে ছাইড়া দিয়া ওরা আমার স্বামীরে মাইরা ফালাইছে। এখন আমি ক্যামনে বাঁচমুকে খাওয়াইবো আমাগো। ওই দালালের জন্যই আমার স্বামী মারা গেছে। আমি ওর বিচার চাই।

কুদ্দুসের বড় ভাই সোবাহান ব্যাপারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাই মালয়েশিয়াতে মোটামুটি ভালোই ছিল। এবার ছুটিতে দেশে এসেই মনির দালালের প্রলোভনে পড়ে জমিজমা বেচে দিয়ে ইতালির উদ্দেশে গেছে। দুই সপ্তাহ ধইরা ভাইডার কোনো খবর পাই না।  কি বাঁইচা আছে নাকি মইরা গেছেতা- জানি না। ওর লগে যারা গেম ঘরে (বন্দিশালায়ছিলতারা কইছে আমার ভাই নাকি আর নাই। ভাইডার বিষয়ে দালালের কাছে জানতে গেছিদালালে শান্ত থাকতে কইয়া আর খবর নাই। তারে (দালালসকাল-বিকাল খোঁজ কইরাও পাইতাছি না।

মনিরের তিন জামাতা লিবিয়ার বড় মাফিয়া

অভিযুক্ত দালাল মনির শেখ রাজৈরের মজুমদারকান্দি এলাকার হায়দার শেখের ছেলে। তাঁর তিন মেয়েদুই ছেলে। দুই বছর আগেও রাজৈর বাজারে দরজির দোকান করতেন মনির। তিন মেয়েকে বিয়ে দেন লিবিয়াপ্রবাসীর সঙ্গে। এর পর থেকেই মনির মানব পাচারের দালালি পেশায় যুক্ত হন। তাঁর স্ত্রী হামিদা বেগমের নামে গত  মাসে রাজৈর পৌরসভা  টেকেরহাট বন্দরে কিনেছেন অন্তত  কোটি টাকার জমি।

এলাকাবাসী জানানমনিরের তিন জামাতা লিবিয়ার মানব পাচারকারী  মাফিয়াদের সঙ্গে যুক্ত। দালাল মনিরের কাজ হচ্ছেস্থানীয়ভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের প্রলোভন দেখানো। তারপর জামাতাদের মাধ্যমে বডি কন্ট্রাক্টে তিনি ইতালিতে পাঠানোর কাজ করেন। প্রতিটি চুক্তি করেন ১৬ লাখ টাকায়।

সম্প্রতি লিবিয়া উপকূলে ২৩টি লাশ ভেসে আসার পর থেকে পরিবার নিয়ে আত্মগোপন করেছেন মনির। বাড়িতে তাঁর চাচাতো ভাই  ফুফুরা তাঁর বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। প্রতিবেশীরা জানানদরজি মনির এখন ‘মাফিয়া মনির’ হয়ে গেছে।

প্রতিবেশী আকাশ হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনির এসব ঘটনা মীমাংসা করার জন্য লোকজন ধরা শুরু করেছেন। আপস-মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত মনির গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন না। তবে কোথায় কখন গেছেনতা কেউ বলতে পারছেন না।

স্থানীয়দের তথ্যমতেমনির শেখ ছাড়াও এই চক্রের সঙ্গে রয়েছেন রাজৈরের হরিদাসদি এলাকার স্বপন মাতুব্বরফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলীপুরের রফিকুল ইসলামমাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর এলাকার আম্বিয়া বেগম প্রমুখ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইতালি পাঠানোর স্থানীয় আরেকটি চক্রের এক দালাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাজ লোক ম্যানেজ করা। এই কাজ আমরা লিবিয়াতে বসবাসরত বাংলাদেশি দালালের মাধ্যমে করে থাকি। লিবিয়া পর্যন্ত পাঠাতে প্রথম দফায় ১২ লাখ টাকা নিই। পরে গেম দিতে (নৌপথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি লাখ টাকা নেওয়া হয়। আমরা এখান থেকে লোক আর টাকা কালেকশন করি। মূল কাজ করে লিবিয়ার মাফিয়ারা। কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের মৃধাকান্দি গ্রামের হোসেন হাওলাদারের ছেলে মিরাজ হাওলাদার লিবিয়ায় বড় মাফিয়া। তিনিও দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় এই কাজ করে যাচ্ছেন। মাদারীপুরে বেশির ভাগ লোকাল দালাল এখন তাঁর হয়েই কাজ করে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন  অর্থভাস্কর সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানব পাচারসংশ্লিষ্ট ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হচ্ছে। তবে সম্প্রতি কয়েকজন নিহত  নিখোঁজের ঘটনায় থানায় এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করতে আসেননি। রাজৈর উপজেলায় নিহত তিনজন  নিখোঁজ সাতজন রয়েছেন বলে পরিবার সূত্রে জানতে পেরেছি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেনতাঁদের ধারণাযাঁরা নিখোঁজ রয়েছেনতাঁরাও মারা গেছেন। ভুক্তভোগী এসব পরিবারকে আইনি যেকোনো সহযোগিতা করতে পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত।  ছাড়া বেশ কয়েকজন দালালের নাম তাঁরা জানতে পেরেছেন। তাঁদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


হানি ট্র্যাপে ভারতীয় নৌ কর্মকর্তা, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার

  দুই ঠিকাদার কর্মীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ নৌঘাঁটির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। এতে পাচার হয়েছে ঘাঁটির সং...